Festival News

সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ঋত্বিক ঘটক সেমিনার অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে অনলাইনে ৪র্থ সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়েছে। ৭৬ দেশের ৩৫১ টি চলচ্চিত্র জুরী বোর্ডের সদস্যরা অনলাইনে দেখে সেরা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালক ও বিভিন্ন শাখায় পুরস্কারের জন্য মনোনীত করবেন। পুরস্কার প্রাপ্তদের ঢাকায় বর্নাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। ২৯ ফেব্রুয়ারি অনলাইনে জুরী স্ক্রীনিং শেষ হবে।

আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর গেটে মেঘ ফাউন্ডেশনের অফিসে সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে “বিশ্ব বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক কুমার ঘটকের জন্মশত বর্ষ আন্তর্জাতিক সেমিনার” অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে আলোচনা করেন ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক সায়ক মুখার্জী, সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের জুরী বোর্ডের সদস্য, চিত্রসমালোচক, লেখক, সাংবাদিক আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর, জুরী বোর্ডের সদস্য লেখিকা রিনাৎ সুলতানা, জুরী বোর্ডের সদস্য চিত্রনাট্যকার শামীম সৈকত, সেমিনার সঞ্চালনা করেন তোহুরা আক্তার তুলি। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক মনজুরুল ইসলাম মেঘ।
ঋত্বিক কুমার ঘটক জন্মশত বর্ষ আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তারা ঋত্বিক কুমার ঘটকের চলচ্চিত্রের নানা বিষয়ের নান্দনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ঋত্বিক কুমার ঘটকের চলচ্চিত্রে মানুষ ও দেশ প্রেম নিয়ে কথা বলেন ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক সায়ক মুখার্জী। ঋত্বিক কুমার ঘটকের চলচ্চিত্রে বাস্তব জীবনে প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে আলোচনা করেন সাংবাদিক আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর ও চিত্রনাট্যকার শামীম সৈকত। সেমিনারে লিখিত প্রবন্ধ পাঠ করেন লেখিকা রিনাৎ সুলতানা। ঋত্বিক কুমার ঘটকের চলচ্চিত্রের নান্দনিক সৌন্দর্য ও আলোচনার বিষয়বস্তুর উপর সভাপতির বক্তব্য রাখেন মনজুরুল ইসলাম মেঘ।
উল্লেখ্য, ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের উৎসর্গ করা হয়েছে ৪র্থ সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। উৎসবের অন্যতম অংশ হিসেবে “বিশ্ব বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক কুমার ঘটকের জন্মশত বর্ষ আন্তর্জাতিক সেমিনার” আয়োজন করা হয়েছিলো।
সিআইএফএফ প্রতিষ্ঠাতা ও উৎসব পরিচালক মনজুরুল ইসলাম মেঘ জানান এশিয়ার অন্যতম প্রধান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মর্যাদা অর্জন করেছে সিআইএফএফ। ৪র্থ বার আমরা আয়োজন করছি এই উৎসব। নিরপেক্ষ জুরীগনের বিচারের মাধ্যমে আমরা পুরস্কার প্রদান করি, আমাদের উৎসবে পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র বিভিন্ন দেশে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে ইতোপূর্বে। আমরা আমাদের সততা দিয়ে এই উৎসব বিশ্বে পরিচিত করতে চাই। ৭৬ টি দেশের ৩৫১ টি সিনেমা নিয়ে এই বারের এডিশন হচ্ছে। ইতোপূর্বে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ ১২০ টি দেশের সিনেমা আমাদের উৎসবের একই এডিশনে প্রতিযোগিতা করে শতদেশের অধিক দেশের অংশগ্রহনের রেকর্ড করেছে।
মনজুরুল আরা বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের মর্যাদা তুলে ধরে সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এগিয়ে যাচ্ছে। এত বড় উৎসব আয়োজন করলেও সরকারী সহযোগিতা আমরা পাইনা এবং চলচ্চিত্র সেন্সর বাধ্যবাধ্যকতা থাকায় বাংলাদেশী দর্শকদের ভালো ভালো সিনেমা দেখার সুযোগ করে দিতে পারিনা। সরকারী সহযোগিতা পেলে সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে ভূমিকা রাখবে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা সায়য় মুখার্জী বলেন, বাংলাদেশে আমি অনেক বার এসেছি, সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের নাম বিশ্বে সমাদৃতি। নিরপেক্ষতা ও মান সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রকে পুরস্কৃত করার জন্য সিনেমাকিং এর মর্যাদা ও গুরুত্ব বেড়েই চলছে। ঋত্তিক ঘটককে নিয়ে আন্তর্জাতিক সেমিনারে বক্তা হিসেবে কথা বললাম, ঋত্তিক ঘটক এর বর্ণাঢ্য চলচ্চিত্র জীবন আমাদের জন্য সব সময় প্রাসঙ্গীক।
জুরী বোর্ডের সদস্য আব্দুর রহমান জাহাঙ্গীর বলেন, সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে। ব্যক্তি উদ্দ্যোগে শুরু হলেও এই উৎসব এখন বিশ্ব ব্যাপী সমাদৃতি। জুরী বোর্ডের সদস্য হিসেবে বিভিন্ন দেশের মান সম্পূর্ণ ভালো ভালো সিনেমা দেখলাম। সেন্সরের বাধ্যবাধ্যকতা থাকায় বাংলাদেশী দর্শকরা এই সিনেমা গুলি দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, এটি অত্যান্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমি সরকার ও প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, সিনেমাকিং আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সিনেমাগুলির সেন্সর ফি সরকারী ভাবে মওকুফ করে বাংলাদেশী দর্শকদের বিশ্ব নন্দিত সিনেমাগুলি দেখার সুযোগ করে দিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Film & Festival News

CinemaKing Limited